নির্বাসনের দিনলিপি- উপসংহার পর্ব
[স্বেচ্ছায় সবার থেকে অন্তরালে যাপিত নির্বাসিত জীবনের বিচ্ছিন্ন ভাবনাগুলো লিখে রাখার তাগিদেই এই ধারাবাহিক পোস্টের অবতারণা। কিছু এলোমেলো চিন্তা, লোকচক্ষুর আড়ালে কিভাবে কাটছে দিন, কি ভাবছি আমার জীবন নিয়ে ইত্যাদি টুকরো টুকরো নানা কথার ভান্ডার এই ধারাবাহিক। সম্পূর্ন ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার প্রকাশ এই পোস্টগুলো। অনেকটা ব্যক্তিগত ডায়েরির পাতা যেন। জীবনের একটা সময়ে গিয়ে এই পোস্টগুলো আমাকে হয়তোবা বুঝতে সাহায্য করবে কিভাবে জীবনের একটি কঠিন সময় পার করেছিলাম।]
জানুয়ারি ২৩, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ
অবশেষে উপলব্ধি করতে পারলাম এই বন্দী জীবনে আমার জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। চারদেয়ালে মাথা ঠুকে মরে স্রেফ নিজেকেই নিজে কষ্ট দিচ্ছি। ফলাফল আসছেনা কোন। এক প্রিয় বন্ধুবর বলেছিলেন এই অবসর সময়টা কাজে লাগাতে। ঘোরাঘুরি করার মাধ্যমে মন হালকা হবে। সেটাই করতে হবে ভাবছি। বাইরে বের হবো। আবার ঘুরে বেড়াবো ঢাকার অলি-গলিতে। আমাদের জীবনটা ক্ষণিকের। এই অল্প সময় বন্দী-নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আফসোস বাড়ুক সেটা চাই না। ঘোরাঘুরি করে কাটিয়ে দেওয়াটাই যথাযথ। জীবন যে লক্ষ্যে চলার সেদিকেই চলবে। ফল ভালো হবে কি মন্দ সেটা ভেবে গত ১ মাস দুঃসহ হতাশায় ভুগেছি। এবার বিরতি চাই। দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি। যা হওয়ার সেটা অবশ্যম্ভাবী। অনিশ্চিতের আশংকায় বর্তমানকে উপেক্ষা করা ঠিক হবেনা।
অল্প দিনেই জনপ্রিয় পরিবহন সেবা "উবার" ভাড়া বাড়িয়ে নিলো। যাত্রা শুরুর ২ মাসের মধ্যে ২০-২২% ভাড়া বাড়িয়েছে। এটা কিন্তু আন্দাজ করেছিলাম আগেই। শুরুতে অল্প ভাড়ায় যাত্রী সেবা দিয়ে জনপ্রিয়তা বাড়ার পর ভাড়া বাড়ানো পুরানো ব্যবসায়িক কৌশল। আর এই কৌশলই কাজে লাগিয়েছে উবার। ভাড়া বাড়ানোর পর উবার পুরানো জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারবে কি না সেটা সময়ই বলে দিবে। দেখার বিষয় ব্যস্ত ঢাকাবাসী এই সেবাটির উপর কতটা নির্ভরশীল হয়। আমার একাউন্টে দুটো ফ্রি রাইড জমা পড়ে আছে। মেয়াদ ফুরোচ্ছে সেগুলোর। দ্রুত কাজে লাগানো উচিত।
নিউজিল্যান্ড সফরের শেষটা ড্র দিয়ে শেষ হবে ভেবেছিলাম। বৃষ্টির কারনে পুরো ১ দিন নষ্ট হওয়ার পরেও ফলাফল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যথারীতি ২য় ইনিংসে (১৭৩ রানে অল-আউট) সেই পুরানো ভাঙ্গাচুরা চেহারার বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং এবং আরো একটি সিরিজ হোয়াইটওয়াশের পথে। এই লিখাটি যখন লিখছি তখন জয় থেকে মাত্র ৫২ রান দূরে কিউইরা। বাংলাদেশ দল চাইবে দ্রুত এই সিরিজের স্মৃতি ভুলে যেতে। ইনজুরি, একের পর এক পরাজয় আর দল নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা - সবমিলিয়ে খুবই বাজে একটা ট্যুর শেষ হচ্ছে। এখান থেকে শিক্ষা নিতে হলে সবার আগে বিসিবির মাথামোটা কর্তাব্যক্তি আর আমাদের "গবেষক" কোচের নেওয়া উচিত। ৩ বছর পরের বিশ্বকাপের জন্য দল বাছাই প্রক্রিয়ার নামে অনভিজ্ঞ দল খেলিয়ে এরচেয়ে ভালো ফল আশা করাটাও ভুল। এই সিরিজে কতজন খেলোয়াড়ের ডেব্যু হলো সেটা খাতাকলম নিয়ে হিসেব কষতে হবে!
রামপাল ইস্যুতে ডাভোস সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমেরিকার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোরের বিতর্ক গত কিছুদিন যাবত টক অব দ্য মিডিয়া ছিলো। এই ইস্যুতে কিছু বলার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু অরণ্যে রোদন করে লাভ কি? প্রকৃতি উজাড় করে মানুষ নিজের আখের গোছাতে চাইলে এর শাস্তি প্রকৃতিই দিবে। প্রতিবাদ-হরতালের চেয়ে সেই "প্রাকৃতিক শাস্তি" আরো ভয়াবহ। সেটার অপেক্ষায় রইলাম।
(সমাপ্ত)