নির্বাসনের দিনলিপি-০৬
[স্বেচ্ছায় সবার থেকে অন্তরালে যাপিত নির্বাসিত জীবনের বিচ্ছিন্ন ভাবনাগুলো লিখে রাখার তাগিদেই এই ধারাবাহিক পোস্টের অবতারণা। কিছু এলোমেলো চিন্তা, লোকচক্ষুর আড়ালে কিভাবে কাটছে দিন, কি ভাবছি আমার জীবন নিয়ে ইত্যাদি টুকরো টুকরো নানা কথার ভান্ডার এই ধারাবাহিক। সম্পূর্ন ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার প্রকাশ এই পোস্টগুলো। অনেকটা ব্যক্তিগত ডায়েরির পাতা যেন। জীবনের একটা সময়ে গিয়ে এই পোস্টগুলো আমাকে হয়তোবা বুঝতে সাহায্য করবে কিভাবে জীবনের একটি কঠিন সময় পার করেছিলাম।]
জানুয়ারী ১৭, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ
ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের, বিশেষত মুম্বাই শহরের বিখ্যাত খাবার "পাও-ভাজি (Pav Vaji)" যে ঢাকার গলির দোকানে মিলবে এটা আশা করিনি। গতবছরের শুরুর দিককার ভারত সফরের সময় এই বিশেষ খাবারটি খেয়েছিলাম। একধরনের পাউরুটির (চারকোনা আকৃতির) ভেতর গাজর-মূলা-শসা-শিম ইত্যাদি নানা সবজি দিয়ে বানানো কড়া ঝালের ভাজি মিশিয়ে তৈরি হয় এই খাবারটি। পাশ্চাত্যের ফাস্টফুড বার্গারের ভারতীয় সংস্করণ বলা চলে। সাথে থাকে চাটনি অথবা তেঁতুলের আচার। মুম্বাইয়ের নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সবার বিকেলের নাস্তা হিসেবে বহুল জনপ্রিয় এই খাবারটি স্বল্পমূল্যেই মেলে ওখানে। ভারতে এক প্লেট "পাও-ভাজি" খেয়েছিলাম ২৫ রুপিতে। কথা হলো, গতকাল বিকেলে উদ্দেশ্যহীনভাবে হাটঁতে গিয়ে মোটামুটি অনেকদূর চলে গিয়েছিলাম। নজর ছিলো আশেপাশের দোকানগুলোর দিকে। এক সংকীর্ণ গলির ভেতর (জায়গার নামটি অজ্ঞাত থাকুক) দোকানে এই খাবারটি বানাতে দেখে অবাকই হয়েছি বলা যায়। এক প্লেট ২০ টাকা দরে চেখে দেখলাম। পার্থক্য হলো, এখানে বার্গারে ব্যবহৃত গোলাকৃতি পাউরুটি ব্যবহার করেছে এরা আর ভাজিতে ঝাল তুলনামূলক কম, সবজির সাথে মাংসের কিমা মিশ্রিত আছে। মূল তফাত এখানেই। মুম্বাইয়ের "পাও-ভাজি" ভেজিটেরিয়ান, ঢাকায় এসে ওটাই হয়ে গেছে আমিষ। যস্মিন দেশে যদাচারঃ
দেশে ফাস্ট বাউন্সি পিচ না বানালে আর চলছেনা। গতকালের টেস্ট ম্যাচটি দেখে এই উপলব্দি আবারো হলো। নিশ্চিত ড্রয়ের ম্যাচ কিভাবে অসহায়ভাবে বাংলাদেশ হেরে গেলো সেই আলোচনা ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠছে কিউই পেসারদের বাউন্সে জর্জরিত ইনজুরি আক্রান্ত ব্যাটসম্যানদের কথা। তবে মুশফিক ইনজুরি নিয়েও যেভাবে লড়েছে সেটা প্রশংসার দাবিদার। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে পারেনি সিনিয়ররা। সাকিব-তামিম এদের আউট দৃষ্টিকটু। ওদিকে বেটেখাটো মুশফিককে টার্গেট বানিয়ে বাউন্সারের মহড়া চালিয়েছে কিউই বোলাররা। এভাবে চলবেনা আর। দেশে ফাস্ট বোলিং পিচ বানানো কঠিন কিছু নয় বলে মনে করি। ফাস্ট পিচে নিয়মিত খেলার অভ্যাস থাকলে বিদেশে গিয়ে এভাবে ভুগতে হবেনা ভবিষ্যতে। বিসিবির কানে এখন কথাটা পৌঁছালেই হয়! নিজ দেশে পাওয়া সাফল্যের গর্বে ফুলে না থেকে বিদেশেও যেন সাফল্য আসে সেদিকে নজর দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
শার্লকের ৪র্থ সিজন শেষ হয়ে গেলো। দিন দিন সিরিজটা জটিল হয়ে উঠছে। উঁচুমানের বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন দর্শক ছাড়া বাকিদের মাথার এন্টেনার উপর দিয়ে যাবে স্টোরিলাইন। এটা নিয়ে অবশ্য মিডিয়ার কিছু সমালোচনার মুখেও পড়েছে নির্মাতারা। কিন্তু কঠিন স্টোরিলাইন ছাড়া ডিটেকটিভ সিরিয়াল জমেনা, অন্তত ব্যক্তিগতভাবে সেটাই মনে করি। দর্শককে ভাবাতে হবে, শেষমুহূর্ত পর্যন্ত যেন বোঝা না যায় মূল অপরাধী কে। দর্শককে অন্ধকারে রেখে ধীরে ধীরে রহস্যের গভীরে নিয়ে যাওয়াতেই নির্মাতার সাফল্য নিহিত।
(চলবে)